জামাত উলেমা ই হিন্দ ভারত ভাগের বিপক্ষে ছিল এবং এরা তত্ত্বগত ভাবে "ধর্ম নিরেপেক্ষ" ভারতকে মানে। এই পর্যন্ত শুনলে মনে হয় ঠিকই আছে-কিন্ত জামাত উলেমা হিন্দের শেষ দশ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে খুব পরিষ্কার ভাবে প্রতিভাত হয় এরা ইসলামিক মৌলবাদের আরেকটা কুৎসিত মুখ ছারা কিছুই না। জামাত উলেমা হিন্দের শেষ কয়েক বছরের কার্যকলাপের নমুনা
- তসলিমার বিরুদ্ধে কোলকাতায় সংগঠিত ইসলামিক মৌলবাদি আন্দোলনের পুরোভাগে এরা ছিলেন
- মেয়েদের ৩৩% রিজার্ভেশনের বিরুদ্ধে-এরাও অগ্রভাগে আছেন। কারন মেয়েদের বাইরে কাজ করা বা রাজনীতি করা এরা পছন্দ করেন না। অল ইন্ডিয়া প্রগ্রেসিভ উইমেন এসোসিয়েশনের সেক্রেটারী তাহিরা হাসান খুব কড়া ভাষায় জামাত উলেমা হিন্দের নিন্দা করে এই সংগঠনটি যে মহিলাদের অধিকারের বিরুদ্ধে কাজ করে, তা পরিস্কার করেছেন। সুত্র ঃ http://www.sacw.net/article1238.html
- ২০০৬ সালে বন্দে মাতরম মুসলিমদের জন্যে হারাম করার আন্দোলনেও এরা পুরোভাগে ছিলেন। সূত্রঃ http://www.india-server.com/news/jamiat-e-ulema-e-hind-supports-decree-15213.html
তবে সইফুদ্দিন চৌধুরী কিভাবে এই সিদ্ধান্ত নিলেন-সেটা খুব রহস্যজনক। আমার কাছে বোধগম্য না। জামাত ই উলেমা হিন্দ এবং সিদিকুল্লা ইসলামি মৌলবাদি কাজকর্মের একদম পুরোভাগে আছেন-সেটাত জলের মতন পরিস্কার। পিডিএস একটা ছোট পার্টি-একমাত্র কিছুটা আদর্শবাদের ওপর জোর করেই এরা এগোতে পারত। কিন্ত এই ভাবে কিছু ভয়ংকর মৌলবাদিদের সাথে জোট বেঁধে এবং সেটাকে গালভরা "সেকুলার" আখ্যা দিয়ে লোক হাঁসানোর কি মানে হয়? উনাদের কি ধারনা পশ্চিম বঙ্গে বিজেপি ভোট পায় না বলে বাংলার লোক নির্বোধ?
একটা জিনিস সইফুদ্দিন চৌধুরী এবং মানস ভুইয়া খুব বড় ভুল করছেন। পশ্চিম বঙ্গে বিজেপির অস্তিত্ত্ব নেই কারন এখানে সিপিএম এবং সিপিএম-বিরোধি রাজনীতি ছারা কিছু হয় না। ফলে বিজেপি বা পিডিএস কেও কিছু করতে পারে নি। ২০১১ সালের পর সিপিএম ভেঙে পড়বে। তারপর থেকে পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতিতে অনেক পোলের সৃষ্টি হবে। সেখানে যদি একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান না হয়, বিজেপি ঢুকবেই। এবার সেই তৃতীয় শক্তির জন্যে লোকজন যাদের ওপর ভরসা করছে, তারা যদি সিদিকুল্লার মতন মৌলবাদির ( যারা বন্দে মাতরম, নারী স্বাধীনতা ইত্যাদি অনেক কিছুর বিরুদ্ধে) ল্যাজ ধরে থাকেন, লোকে বিজেপিকেই তৃতীয় শক্তি করবে। বিহারের নির্বাচন আমাদের শিখিয়েছে লোকে এই সব মেকি সেকুলারদের ধার ধারে না। তারা চাইছে কাজ এবং উন্নয়ন। তারা চাইছে সিদিকুল্লার মতন মৌলবাদিদের রাজনীতির বাইরে রাখতে বা লালুর মত ভেকধারী জাতপাতের নেতাদের লাথি মারতে।
সিদিকুল্লাকে যারা প্রাসঙ্গিক করতে চাইছেন, তাদের স্বপ্ন ১০০% সফল হবে। কিন্ত ইতিহাস বড় নির্মম। যারা ওই মৌলবাদের ল্যাজ ধরেছেন, তারা কিন্ত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবেন। বা এই ঘটনার পর হয়ে গেছেন।